বাক্ ১৪১ ।। কোয়ারেন্টাইন
অবরুদ্ধ বাতাসে
নিশ্বাস মিলতেই
শিশুটির আদিম উড়াল চোখে
মাতৃক্রোড়হীনতার শঙ্কা
সন্ধ্যা নামার বেশ আগে কুয়াশা ঘনিয়ে আসছে
ধীরে ধীরে লকডাউনে চলে যাচ্ছে পৃথিবী...
স্বর্গের কল্পিত দূতেরাও স্থবির মারণযাদুমন্ত্রের আগুনে
ঘরে ঘরে বাড়ছে কোয়ারেন্টাইন
ক্রমেই আইসোলুশনের
পাশে ব্যস্ত মিলিটারি ট্রাকগুলো।
দূরবর্তী কবিতার শহর যেন গণসমাধি
শিল্পগ্রামের ফাঁকা প্রান্তরে দাঁড়িয়ে—
শূন্যে হাত নাড়ছেন পোপ
কিছুটা কি দিশেহীন ভ্যাটিকান?
যদিও পাখিরা
বিচলিত নয়
বাতাবিলেবুর শুভ্রঘ্রাণে
যখন প্রতিটি
অনুভূতি অভিন্ন একটি গান হয়ে উঠবার
বেঁচে থাকবার...
প্রবাসফেরত প্রিয়মুখের সনাতনী
আলিঙ্গন
অবিশ্বাসের লাভা হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে
মহাপ্রাচীর ভেদ করে আল্পসের পর্বতে পর্বতে,
মসজিদ-মন্দিরে প্রাচীন
সাম্রাজ্যের শিরোস্ত্রাণের ছায়া।
তোমার চুলের ঘ্রাণ নিতে ব্যাকুল হৃদয় আজ
আত্মঘাতী শরীরের বিস্ফোরণে জর্জরিত।
মানুষের এক-একটি
মৃত্যু
ক্রন্দসী উপতক্যার খাদ থেকে নেমে
হেঁটে যাচ্ছে
তুষার আবরিত পাইনগাছের সারি ধরে
কখনও বা উড়ছে মরুর বুকে বালু ঝড় হয়ে,
এ যেন রহস্য গল্পের কোনো ভয়ংকর চরিত্র।
আমাদের আসন্ন প্রজন্মের স্পন্দনগুলো ছুঁতে পারছি না
চারিদিকে অদৃশ্য আতঙ্কের বিচ্ছুরণ
সারাক্ষণ ঘিরে রাখছে অবিশ্বাসের অবসাদে,
প্রতিটি হৃদয় মরে যাচ্ছে স্ব-স্ব আত্মার
গহীনে।
সামাজিক ডিসটেন্স
কবিতাকে লাশ করে দিচ্ছে মানুষের এই গ্রহে,
দম্পতিরাও পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ে ফিরে যাচ্ছে মৃত্যু টেলিগ্রাম হাতে।
বন্দুক-বিস্ফোরক নয়; ক্লান্ত মধ্যাহ্নের হোমকোয়ারেন্টাইনে বসে—
দেখছি শীতল নিস্তব্ধতা,
নাগরিক শূন্য নগরের হাহাকার!
অনেক দূর দিগন্তে ঝাপসা হয়ে যায় দৃষ্টি তবু
স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে—
হে অগ্নিঝরা
মার্চ, নিকট অতীতে পাওয়া স্বাধীনতা পুঁজি করে
এসো, জাতিগত
বিভেদ ভুলি শ্বাশত ভোর হতে
হয়ে উঠি প্রাণসঞ্চারিনী কোমল নদী, পবিত্রতম পরমাত্মা...
No comments:
Post a Comment