অভিষেক নন্দী

বাক্‌ ১৪১ ।। 




পাটিগণিতের শাঁখ

চিতার কাঠ বিক্রি করি। জীবনের প্রথম অঙ্কটি নির্ভুল করা ছেলেটিকে উলুধ্বনির পাশে নিয়ে বসে আছি এখন। অর্কিডের জ্বলন্ত শেকড়ের মতো মৃদুহাসি তার। ঘুলঘুলির রোদ সামলাতে গিয়ে, পায়ের পাতায় জড়িয়ে নিয়েছে রকেটবাসের চাকা!
রক্তধোঁয়া থেকে পালিয়ে আসা ফুটোস্কোপ, ডুবঅ্যাসিডে সমস্ত উচ্ছ্বাসে ছিঁড়ে নিচ্ছে ছেলেটির প্রিয় সিনেমার পোস্টার। দ্বিতীয় অঙ্কটিও হবেই হবে, সিওর। জুয়ার টেবিলে ট্রাইসেপ্‌স ফুলিয়ে বসতে-না-বসতেই, বংশের প্রণম্য গুরুদেব হাতে তিনটে তাস তুলে দিল ওর!


ব্যাকরণ

ধানের গোলা থেকে চুরি যাওয়া অন্ধকার
চিঠিতে তোমার কথা জিজ্ঞেস করে খুব...
পোষা দুধকুয়ো তোমাকে ধ্বনিত করছে
চিবুক ও চৈতন্য উচ্চারণ করতে গিয়ে...

কোথায় হারাব আমি নিজেকে?
যেখানেই লুকোই— যেন আমার জন্য বসে আছো
সদ্য জন্মানো সংসারের গোল ধরে

কোথায় হারাব আমি নিজেকে? প্রতিবারই বৃষ্টি এসে
ধুয়ে দিচ্ছে আমাদের বিচ্ছেদের কাগজপত্র


পরকীয়া

তোমার বুকে উঁচু উঁচু স্তন চাই না আর
একটা দেড় কামরার ঘর চাই
যেখানে মুখভার করে বসে থাকতে আসবে
একজন সমকামী কবি

তাকে বুকপকেটে মুড়ে ছুট্টে যাব নদীতে
খাওয়াদাওয়া হবে, যাঁরা
রামধনু কেনাবেচা করে তাদের সঙ্গে!
অথচ বৃষ্টি মাখব না, সুপুরি পাতায় বেঁধে
গায়ে ঘষব থকথকে বজ্রবিদ্যুৎ

পেপসি-কারখানার ধোঁয়ার ওপর
আমি আর সেই মানুষটা গল্প করতে করতে
কান্নায় ভেঙে পড়লে,
অনেক রাত্তিরে হুইলচেয়ার চেপে
তুমি ধাক্কা মেরে চুম্বন ভেঙে দিও আমাদের...


ব্ল্যাকবোর্ড

খিদের যন্ত্রণা আমাকে এতটাই নুইয়ে রেখছে,
রাষ্ট্র ভাবছে— পতাকার সামনে আমি
দেশপ্রেমে নত!

1 comment:

  1. সম্ভবত আপনার লেখা এই প্রথম পড়লাম। ভালো লাগলো। বিশেষত 'ঘুলঘুলির রোদ', 'চিবুক ও চৈতন্য', 'যারা রামধনু কেনাবেন করে' এবং ব্ল্যাকবোর্ড এর পুরোটা দারুণ

    ReplyDelete